কবিতা, ব্যর্থ পথিক,

শুনলাম, গতকাল নাকি বর পক্ষেরা তোমায় দেখতে এসেছিল.!
তোমার মুখে ছিলো কতো মিষ্টি হাসি,
ভুরু ও চোখের পলকে পরেছিলে কালো কাজল,
মাথার সিঁথিতে ও গলায় পরেছিলে হলদে ফুল;
পরনে কী যে পরেছিলে, তোমার অর্ধাংশ ছবিটা দেখে তা আর অনুমান করতে পারিনি!
জেনেছি, ছেলেটি নাকি ছিলো- লম্বায় পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি,
দেখতে ছিলো ঠিক যেন- হলিউড তারকা “রবার্ট প্যাটিনসনের” মতো,
ছিলো- প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের সেলারি প্রাপ্তি একজন সরকারি চাকরিজীবী;
প্রতীক্ষায় যা চেয়েছিলে তুমি- তোমার ভাগ্যের দুয়ারে সেটাই এসে আজ উপস্থিত;
জীবনে সুখী হতে এরবেশি আর কি চাই তোমার.!
তোমার মলিন মুখের মিষ্টি হাসির জাদুতে পছন্দের সেই ছেলেটিকে করেছো তুমি চির বন্দি,
আজ বাদে কিছুদিন পরে উতলা মনের বারান্দায় বাজবে বিয়ের সানাই,
সানাইয়ের সুরে অতীত, আগামী ও ভবিষ্যৎ-এর সম্পূর্ণ ক্ষুধাটা মিটাবে পুরো রাত্রিবেলায়,
এরপর উদাসী ক্লান্তি দেহে এক পর্যায়ে তুমি ঘুমিয়ে পরবে!
ভোরের পাখিরা সবাই আজ কতো নীরব!
মুয়াজ্জীনের আযানের পরিবর্তে হঠাৎ তুমি স্বর্গের বুকে মাথা রেখে মাইকের আওয়াজে শুনতে পারবে-
তোমার ভালোবাসা না পাবার ব্যর্থতায় অবহেলিত সেই ছেলেটি আজ পরপারের যাত্রী.!

-শামীম নিমু✍️
রচনাকালঃ ১৪-০৫-২৪ইং।

কবিতা, ভালোবাসার মিথ্যে অনুভব

সাক্ষাৎ ব্যতীত ফোন-যোগে প্রায়ই ভালমন্দ কথাবার্তা হতো,
একটা সময় ভাবতাম, সে বুঝি আমায় গোপনে ভীষণ ভালোবাসে;
কিন্তু সে ভাবনা ছিলো সবেই ভুল! এটা প্রমাণ করতে-
হঠাৎ একদিন, কোনো ধরনের সমস্যা নেই জেনেও আমি আমার সামান্য কিছু সমস্যার কথা তাকে জানালাম,
যা সে মুহূর্তে কিম্বা অল্প কিছু দিনের সময় চেয়ে নিয়ে যেকোনো একটি সমাধানের পথ দেখিয়ে দিতে পারতো! অথচ, তাঁর এ সমাধানের ইঙ্গিত ছিলো- “আমি হয়তোবা তাঁর কাছে আর্থিক সাহায্য চাইতে এসেছি.!”

-শামীম নিমু✍️
রচনাকালঃ ০১-০৫-২০২৪ইং।

কবিতা

অশ্রুপাত
-শামীম নিমু✍️

মাঝ রাতে আমি বালিশ খুঁজছি,
অথচ বালিশটা আমার মাথার নিচেই পড়ে আছে;
শুধু বালিশের কাভারটা ভিজে গেছে!
কতো বড়ো একটা বাড়ি! রয়েছে পাঁচ সাতটা ঘর;
প্রত্যেকটা ঘরেই রয়েছে নকশাকার আসবাবপত্র,
নেই শুধু ঘরের মানুষ!
এতো বড়ো বাড়িতে শুধুমাত্র আমি একাই থাকি।
রাতে কিম্বা দিনে- যখন কোনকিছুই ভালো লাগতো না,
অমনি সিঁড়ি বেয়ে ছাঁদের উপর উঠে পায়চারি করে বেড়াতাম, এবং
ঐ সময় লক্ষ্য করেছিলাম-
ছাঁদের কোনখানে ফাটল অথবা কোনো একটি ছিদ্রও ছিল না।
নক্ষত্র ভরা রাত,
আজ রাতে ঝড়-বৃষ্টিও হয়নি,
ভাবছি, তবুও কিভাবে বালিশের কভারটা ভিজলো!
তবে কি কেউ এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে?
কিন্তু কিভাবে? অসম্ভব, এটা কখনো হতেই পারে না!
কতো নীরব রাত্রি,
বাড়ির ভিতরে বা বাহিরে কারো কোনো সাড়াশব্দও নেই,
অনুমতি ছাড়াই অমনি কেউ একজন এসে ঘরে প্রবেশ করতে পারে..
সেটিও কারো পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ-
প্রত্যেকটা ঘরের দরজা জানালা গুলো সব বন্ধই থাকে;
অথচ- ভাবতেই অবাক লাগছে, ভেজা বালিশ,
মাথার চুলগুলিও সব ভিজে গেছে!
ভীষণ অস্থির লাগছিল,
বিছানা থেকে উঠে- ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম,
আয়নার ফলকে মাথার চুলগুলি মুছতে গিয়ে দেখতে পেলাম-
দু’চোখের সাদা অংশে ফুটেছে দুটি লাল গোলাপ।

রচনাকালঃ ২৭-০৩-২০২৪ইং।

কবিতা

কর্তৃত্বের অপব্যবহার

-শামীম নিমু

বিবেকের সীমানায় ইলেকট্রিক কাঁটাতারের বেড়া।
নেমপ্লেটের গায়ে আঁকা নিষিদ্ধ সতর্কীকরণ, স্পর্শ করলেই নির্ঘাত মৃত্যু!
এরপরও কাঁটাতারের চারপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে শৃগাল আকৃতির কিছু রক্ষীবাহিনী!
নিস্তব্ধ চাঁদনী রাত-
তীক্ষ্ণ দক্ষিণা হাওয়া, বেগুনি মেঘের ভাজে উল্কাপাত, মাঝেমধ্যে অসহনীয় চিৎকার;
চারপাশে বিপুল দ্বীপপুঞ্জ, সাগরের কিনারায় মুক্তোর মতো জ্বলছে বালির রাজ্য।
দু ডানায় বালি সরিয়ে নির্ঘুম নীড়হারা ক্লান্ত পাখিরা সব হাঁটু গেড়ে বসে বসে কাঁদছে!
আরেক পাশে সীমাহীন বৃক্ষ, মাটিতে পাতা ঝরার পর পরেই করছে- বিকট গর্জন;
অপূর্ব রাতের হাওয়ায় নরম ঘাসের ডগায় দুলছে যেন শিশির কণা,
কিন্তু না! জ্বলছে- সতীত্ব হারানো অসংখ্য আঠালো ধাতু.!